শুক্রবার, ০৫ মার্চ ২০২১, ০১:৫১ পূর্বাহ্ন
ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এলাকাবাসী
আইন মানছেনা বুড়িচং এর রামপুর গ্রামের ভাই ভাই অটো রাইসমিল ও
সাকিব এন্ড ফারুক অটো রাইসমিল
বুড়িচং (কুমিল্লা) থেকে ফিরে এস এম জহিরুল ইসলামঃ প্রতিনিধি: কুমিল্লা জেলাধীন বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মেসার্স ভাই ভাই অটো রাইসমিল ও মেসার্স সাকিব এন্ড ফারুক অটো রাইসমিল দুটো অবৈধভাবে স্থাপন করে দীর্ঘদিন যাবৎ পরিচালনার ফলে পরিবেশ দুষণ হয়ে এলাকায় মারাতœক ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, ভাই ভাই অটো রাইসমিলটি স্থাপন করা হয় প্রায় ১০ বছর পূর্বে এবং সাকিব এন্ড ফারুক নামের মিলটি স্থাপন করা হয় ৪/৫ বছর পূর্বে। মিল দুটোর মালিক আশরাফ ও ফজলু মিয়া। স্থানীয়দের অভিযোগ মিল দুটো বসতবাড়ীর অতি সন্নিকটে স্থাপন করে পরিচালনার ফলে এর বিরুদ্ধে ছাই ও ধোয়ার প্রভাবে আশপাশের বসতবাড়ীতে যারা বসবাস করে তাদের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, রাতদিন মিল দুটো চালানোর ফলে আশপাশের বাড়ীর মাটি অনরবত কাঁপতে থাকে এবং এর বিকট শব্দে বাড়ীতে থাকা বৃদ্ধ, শিশু, ছাত্র/ছাত্রী, মসজিদের মুসুল্লিসহ বাড়ীতে বসবাসকারী সকলের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ স্থানীয়দের পক্ষ থেকে মিল দুটো খোলা কোন জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করলেও মিল মালিকগণ এ বিষয়ে কোন কর্ণপাত করেননি। এই মিল দুটোর বৈধতার বিষয়ে খোঁজ খবর নিলে জানা যায়, ভাই ভাই অটো রাইসমিলটির পরিবেশ ছাড়পত্র অনেক পূর্বেই শেষ হয়ে গেছে। মালিকগণ এই ছাড়পত্র আর নবায়ন করেননি। সাকিব এন্ড ফারুক মিলটির পরিবেশ ছাড়পত্র ২০১৮ সালের ২৩ মার্চ শেষ হয়ে গেছে। এর পর আর নবায়ন করা হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ আইন অনুযায়ী বসতবাড়ীর সীমানায় যে কোন মিল কারখানা স্থাপন নিষিদ্ধ। মিল মালিকেরা বেআইনীভাবে পরিবেশ অধিদপ্তরকে ভুল বুঝিয়ে প্রাথমিকভাবে মিল দুটোর ছাড়পত্র নেয়। ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর অনুরোধে মিল দুটো মালিকপক্ষ অন্যত্র স্থাপন না করার কারণে স্থানীয় ভুক্তভোগীদের পক্ষে জনৈক ব্যক্তি মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে মিল দুটোর বিরুদ্ধে রীট পিটিশন দায়ের করেন যার নং ১৪৫১৩/২০১৭। ঐ মামলাটি চলাকালীন অবস্থায় মিলের মালিক আলী আশরাফ ভাই ভাই অটো রাইসমিলের পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়ন করবে না মর্মে একটি আবেদন করে এবং সেই আবেদন মোতাবেক হাইকোর্ট বিভাগে এফিডেভিট দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করে। এর পরও মিল মালিকগণ মিল দুটো বন্ধ না করার ফলে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এলাকাবাসী গণমাধ্যমকে জানায়, মিল দুটির দুষনের ফলে ইতিমধ্যে শাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী মারা যায়। এখনও বিভিন্ন রোগে ভুগছে কয়েকজন। একটি সূত্রমতে জানা যায়, ভুক্তভোগীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি একবার মিলদুটোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও পুনরায় সেই সংযোগ আবার স্থাপন করা হয়। এলাকাবাসীর ধারনা প্রশাসনের একশ্রেনীর অসাধু কর্মকর্তাদের অবৈধপন্থায় ম্যানেজ করেই মিল দুটো পরিচালনা করা হচ্ছে।
অতি সম্প্রতি রামপুর গ্রামের এই মিল দুটোর অবস্থা সরেজমিনে দেখতে গেলে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থিত মিল মালিকরা সাংবাদিকদের বলেন, জনবসতি এলাকায় মিল প্রতিষ্ঠার কোন নিয়ম নেই। খোলা জায়গায় যেখানে পরিবেশ দুষনের কোন সম্ভাবনা থাকে না সেখানে মিল প্রতিষ্ঠা করতে পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র দিয়ে থাকে।
Leave a Reply